এডমিশন টিউন https://www.admissiontune.com/2021/11/locomotion-and-movement.html

ছন্দে ছন্দে চলন ও অঙ্গচালনা - জীববিজ্ঞান ২য় পত্র (৭ম অধ্যায়)

জীববিজ্ঞান ২য় পত্রের এই পোস্টে আমরা "মানব শারীরতত্ত্বঃ চলন ও অঙ্গচালনা" সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। দেহকে নির্দিষ্ট আকৃতি দান, দেহের ভার বহন করা, পেশি সংযোগের স্থান প্রদান করা এবং ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে এমন অঙ্গাণুসমূহ রক্ষা করা কঙ্কালতন্ত্রের কাজ। নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ 
চলন ও অঙ্গচালনা, অস্থির নাম মনে রাখার উপায়,
মানুষের কঙ্কাল তন্ত্র ধরণের। যথাঃ 
  • অক্ষীয় কঙ্কাল 
  • উপাঙ্গীয় কঙ্কাল 
অক্ষীয় কঙ্কাল ৮০টি। নিচে এগুলোর নাম ও সংখা উল্লেখ করা হলোঃ
  1. করোটিকা (৮)
  2. মুখমণ্ডলীয় অস্থি (১৪)
  3. কর্ণাস্থি (৬)
  4. মেরুদণ্ড (২৬)
  5. বক্ষপিঞ্জর (২৫)
  6. হাইঅয়েড (১)
করোটিকা, মুখমণ্ডলীয়, কর্ণাস্থি ও হাইঅয়েড অস্থিকে একত্রে করোটি'র অস্থির মধ্যে ফেলা হয়। সে হিসবে করোটির অস্থি সর্বমোট ২৯টি। নিচে এদের নাম ও মনে রাখার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ 

করোটিকার অস্থিসমূহঃ STEP OF

S - স্ফেনয়েড অস্থি (১)
T - টেমপোরাল অস্থি (২)
E - এথময়েড অস্থি (১)
P - প্যারাইটাল অস্থি (২)
O - অক্সিপিটাল  অস্থি (১)
F - ফ্রন্টাল অস্থি (১)

করোটিকার অস্থির মধ্যে টেমপোরাল আর প্যারাইটাল থাকে ২টি করে। বাকি সকল অস্থি একজোড়া করে থাকে। এবার মুখমণ্ডলীয় ১৪টি অস্থির নাম ও সংখ্যা তুলে ধরা হলোঃ

মুখমণ্ডলীয় অস্থি সমূহঃ মামার জানালায় ভোমর পাই 

মা - ম্যাক্সিলা অস্থি (২)
মা - ম্যান্ডিবল অস্থি (১)
জা - জাইগোম্যাটিক অস্থি (২)
না - ন্যাসাল অস্থি (২)
লা - ল্যাক্রিমাল অস্থি (২)
ভোমর - ভোমার অস্থি (১)
পাই - প্যালেটাইন অস্থি (২)

মুখমণ্ডলে ম্যান্ডিবল ও ভোমার অস্থি একটি করে থাকে। বাকি সকল অস্থি দুইটি করে থাকে। অক্ষীয় কঙ্কালে মেরুদণ্ডের ২৬টি অস্থির নাম পড়ার প্রয়োজন নেই। বাকি হাইঅয়েড থাকে ১টি এবং বক্ষপিঞ্জরে থাকে ২৫টি অস্থির যার মধ্যে স্টার্নাম ১টি ও পর্শুকা থাকে ২৪টি। এখন কর্ণাস্থি সম্পর্কে আমরা জেনে নেই। 

কর্ণাস্থির নামসমূহঃ মেইড ইন সিয়াম 

মেইড - মেলিয়াস (২)
ইন - ইনকাস (২)
সিয়াম - স্টেপিস (২)

অক্ষীয় কঙ্কালে হাইঅয়েড নামে একটি অস্থি থাকে। এটা দেখতে "U" আকৃতির হয়ে থাকে। তাছাড়া মানবদেহে U আকৃতির আরও কিছু অঙ্গ আছে সেগুলো হলোঃ ডিওডেনাম, লুপ অব হেনরি, ম্যান্ডিবল ও কোলন (উল্টানো U আকৃতির)। মানুষের মেরুদণ্ডের অস্থি মোট ২৬টি। এগুলোকে ৫টি ভাগে বিভক্ত করা হয়। 

মেরুদণ্ডের অস্থির নাম সমূহঃ 

সারভাইকাল (৭) - সাত = (স) সারভাইকাল ৭টি (সাত) 
থোরাসিক (১২) - বারটি = ১২টি (বার) টি (থোরাসিক)
লাম্বার (৫) - লাভ - ল (লাম্বার), ভ (ফাইভ) - ৫টি
স্যাক্রাম (১)
কক্কিক্স (১)

শিশুদেহে স্যাক্রাম ৫টি ও কক্কিজিয়াল ৪টি থাকে। পরিণত বয়সে এগুলো একটি অস্থিতে পরিণত হয়। ফলে মেরুদণ্ডের মোট অস্থি সংখ্যা ২৬ এ দাঁড়ায়। 

উপাঙ্গীয় কঙ্কাল ১২৬টি। নিচে এগুলোর নাম ও সংখ্যা উল্লেখ করা হলোঃ
  • বক্ষঅস্থি চক্র - ৪টি অস্থি 
  • বাহু (দুটি) - ৬০টি অস্থি 
  • শ্রোণি-অস্থিচক্র - ২টি অস্থি 
  • পা (দুটি) - ৬০টি অস্থি
উর্ধ্বাঙ্গ (দুই বাহু ও বক্ষ অস্থিচক্র) ও নিম্নাঙ্গ (দুই পা ও শ্রোণি অস্থিচক্র)- এর অস্থিগুলোকে একত্রে উপাঙ্গীয় অস্থি বলা হয়। প্রথমে আমরা বক্ষ অস্থিচক্র সম্পর্কে জেনে আসবো।

বক্ষ অস্থিচক্রের অস্থিসমূহের নাম

ক্ল্যাভিকল - এটা দেখতে ইটালিক 'f' অক্ষরের মত বাঁকা অস্থি। মেয়েদের ক্ষেত্রে এটাকে 'Beauty Bone' (বিউটি বুন) বলা হয়ে থাকে। 
স্ক্যাপুলা - এটি চাপা ও ত্রিকোণাকার একটি  অস্থি। 

ঊর্ধ্ববাহু বা অগ্রপদের অস্থি 

হিউমেরাসঃ ঊর্ধ্ববাহুর প্রথম অস্থি এটা। 
রেডিয়াস-আলনাঃ এটি ঊর্ধবাহুর মধ্যবর্তী অংশ। এখানে একত্রে দুইটা অস্থি অবস্থান করে থাকে। ভিতরের দিকের অস্থিকে আলনা এবং বাইরের দিকের অস্থিকে রেডিয়াস বলা হয়। 
কার্পাল অস্থিঃ দুই সারিতে চারটি করে মত ৮টি অস্থি দ্বারা কার্পাল অস্থি গঠিত। কার্পাল অস্থিগুলোর নাম মনে রাখার উপায় - 

She looks too pretty try to catch her. 
She - স্ক্যাফয়েড 
Looks - লুনেট 
Too - ট্রাইকুয়েন্ট্রাল 
Pretty - পিসিফর্ম 
Try - ট্র্যাপেজিয়াম 
To - ট্র্যাপেজয়েড 
Catch - ক্যাপিটেট
Her - হ্যামেট

মেটাকার্পাল অস্থিঃ হাতের তালু গঠনকারী ৫টি অস্থিকে মেটাকার্পাল অস্থি বলা হয়। 
ফ্যালাঞ্জেসঃ আঙ্গুলের অস্থিগুলোকে ফ্যালাঞ্জেস বলা হয়। 

আরও পড়া উচিতঃ 

নিম্নাঙ্গের অস্থিসমূহ 

শ্রোণি অস্থিচক্র ও দু'পা নিয়ে নিম্নাঙ্গের অস্থিচক্র গঠিত। দেহের উভয় পাশের ৩১টি করে মোট ৬২টি অস্থি নিম্নাঙ্গের অন্তর্গত। 
শ্রোণি অস্থিচক্রঃ দুইটি নিতম্বাস্থি একত্রে মিলে গঠিত হয় শ্রোণি অস্থিচক্র। তিনটি অস্থি একত্রিত হয়ে নিতম্বাস্থি গঠন করে। এগুলো হলোঃ 
  • ইলিয়াম 
  • ইশ্চিয়াম
  • পিউবিস 
নিম্নবাহু বা পায়ের অস্থি
ফিমারঃ এটি মানবদেহের সবচেয়ে দীর্ঘ অস্থি। অন্যদিকে স্টেপিস হলো মানবদেহের ক্ষুদ্রতম অস্থি। ফিমারে প্যাটেলা নামে একটি সিসাময়েড অস্থি রয়েছে। যেসকল অস্থির উৎপত্তি পেশির টেন্ডন থেকে তাদেরকে সিসাময়েড অস্থি বলা হয়। 
টিবিয়া-ফিবুলাঃ নিম্নবাহুর মধ্যবর্তী অংশে এই অস্থি থাকে। এখানে টিবিয়া ভিতরের দিকে এবং ফিবুলা বাইরের দিকে থাকে। ফিবুলা দেখতে অনেকটা দীর্ঘ যষ্টির মত গঠন। 
টার্সাল অস্থিঃ পায়ের গোড়ালি ও পদতল গঠনকারী অস্থি হলো টার্সাল অস্থি। এগুলোর নাম মনে রাখার উপায় হলোঃ 

কাকার টানে ৩ কাকি 
কা - ক্যালকেনিয়াস 
কা -কিউবয়েডাল 
টা - ট্যালাস 
নে - নেভিকুলার 
৩ কাকি -  ৩টি কুনিফর্ম

মেটাটার্সাল অস্থিঃ পায়ের সম্মুখ ভাগ গঠন করে থাকে। প্রতি পায়ে ৫টি করে মেটাটার্সাল অস্থি অবস্থান করে। 
ফ্যালাঞ্জেসঃ পায়ের আঙ্গুলের অস্থিগুলোকে ফ্যালাঞ্জেস বলা হয়। প্রতি পায়ে ১৪টি করে ফ্যালাঞ্জেস থাকে। 

এখানে মোটামুটি চলন ও অঙ্গচালনা অধ্যায়ের মুখস্ত অংশের উপর আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি বিষয়টি সহজভাবে আপনাদের সামনে তুলে ধরতে পেরেছি। কোন প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকলে কমেন্ট করে জানানোর অনুরোধ করছি। 
সবার সাথে শেয়ার করুন
এই পোস্টে 2 জন কমেন্ট করেছেন

এডমিশন টিউন কী?