সমন্বিত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতি ২০২৩
আসসালামু আলাইকুম, অ্যাডমিশন সিজনে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে তোমরা প্রায়ই ঝামেলায় ভুগে থাকো। একসময় বেশির ভাগ শিক্ষার্থীর চাহিদা ছিল হয় মেডিকেল না হয় ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার স্বপ্ন। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে এখন নতুন আরেকটি ধারা যুক্ত হয়েছে “কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়”। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রচুর শিক্ষার্থী রয়েছে যাদের আগ্রহের কেন্দ্রে রয়েছে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।
আজকে আমরা এর প্রস্তুতির আদ্যোপান্ত নিয়ে কথা বলবো তবে তার আগে চাকুরির ক্ষেত্র ও ক্যারিয়ার সম্পর্কে কিছু বিষয় ক্লিয়ার করে নেই।
কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে ক্যারিয়ার কেমন?
কৃষিবিদরা বিসিএসে কারিগরি ও
সাধারণ উভয় ক্যাডারে আবেদনের সুযোগ পাওয়ায় দেশের সব সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরি
করতে পারে। তাছাড়া বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা
ইনস্টিটিউট (বিনা),ধান, পাট, ইক্ষু, মসলা, তুলা, চা ইত্যাদি গবেষণা ইনস্টিটিউটসহ
বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানে রয়েছে চাকরির সুযোগ। ভেটেরিনারি অনুষদ থেকে পাস করা
শিক্ষার্থীরা বিসিএসের মাধ্যমে সার্জন পদে চাকুরি পেতে পারে। তাছাড়া বিভিন্ন
সরকারি প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় গো প্রজনন কেন্দ্র ও দুগ্ধ খামার, হরিণ
প্রজনন কেন্দ্র, ছাগল প্রজনন কেন্দ্র, মহিষ প্রজনন কেন্দ্রসহ বিভিন্ন প্রাণী
গবেষণা প্রতিষ্ঠানে রয়েছে চাকরির সুযোগ।
মৎস্য বিজ্ঞান থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদেরও রয়েছে এমনই অসংখ্য চাকরির সুযোগ। অন্যদিকে দেশের কৃষি ব্যাংকগুলোতে অগ্রাধিকারসহ চাকুরির সুযোগ রয়েছে। অনেকে আবার নিজের পায়ে দাঁড়াতে নিজেই হয়ে ওঠেন উদ্যোক্তা, গড়ে তোলেন নিজস্ব খামার। শিক্ষাজীবনের অর্জিত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে গড়ে তোলেন নিজস্ব প্রতিষ্ঠান, কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেন অসংখ্য বেকারকে।
ছবিঃ ড. ওয়াজেদ মিয়া গবেষনাগার, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি কিভাবে নিবে?
যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতির আগে মূল কাজ হলো সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নব্যাংক সম্পর্কে ধারণা থাকা। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্ন পুরোপুরি অন্যান্য ভার্সিটি থেকে পুরো আলাদা হয়ে থাকে। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা যায় তবে সম্ভবত 100MS (এই বছরের সার্কুলার দেখে নিবে) মডেলের ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবে। উল্লেখ্য, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় বেশিরভাগ প্রশ্নই মেইন বই থেকে হয়ে থাকে।
ছবিঃ স্টাফ কোয়ার্টার জামে মসজিদ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
Math প্রিপারেশনঃ এখানে মূল কৌশলটা হলো Math এ এমন কিছু গাণিতিক সমস্যা দিবে যেগুলো ক্যালকুলেটর ছাড়াই করা যায়। পক্ষান্তরে কিছু জানা Math দেয় হবে যেগুলো তোমার ছেড়ে আসতে হবে। কারণ ওই Math করতে ৫-৬ মিনিট সময় লাগবে, অথচ অন্যান্য ছোটখাটো ম্যাথের সমান নম্বর থাকে। ফলে একটা পারা ম্যাথ ৫ মিনিট ধরে না করে ওই সময়ে অন্য ছোট ২টা ম্যাথ করা ব্যাটার। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের Math এর প্রশ্নের ধরণ ঢাবি-A ইউনিটের মতো।ছবিঃ কৃষি অনুষদ ভবন, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
Chemistry প্রিপারেশনঃ যারা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের একটি আসন নিশ্চিত করতে চাও তাদের জন্য Chemistry মূল নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। Chemistry প্রশ্ন ভার্সিটি A ইউনিটের মতো হয়ে থাকে। কৃষিতে পজিশন আগাতেও Chemistry সাহায্য করে। বিগত সালের প্রশ্ন ও ঢাবি ক ইউনিটের প্রশ্ন সলভ করে গেলে প্রিপারেশন ভালো হবে।ছবিঃ কৃষকরত্ন শেখ হাসিনা হল, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
Biology প্রিপারেশনঃ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্যান্য ভার্সিটি থেকে স্বত্যন্ত্র করে Biology প্রশ্নের ধরণ। এখানে Biology থেকে ইউনিক প্রশ্ন করা হয় যেটা অন্যান্য ভার্সিটির প্রশ্নের প্যাটার্নের সাথে মিলে না। যেমনঃ মাছ চাষ, বিভিন্ন ধরণের কালচার, ভিন্ন ফলের ভিন্ন ভিন্ন রঙ কেন, রেপটিলিয়া পর্ব দিয়ে কোন বিদ্যায় আলোচনা করা হয়, কোন ধরণের কাটিং পদ্ধতি কোথায় ব্যবহার করা হয়- এই জাতীয় প্রশ্ন এসে থাকে। এই জাতীয় প্রশ্ন বইয়ে কম পাওয়া যায়। তবে বেশির ভাগ প্রশ্ন বই থেকেই এসে থাকে। উদ্ভিদবিজ্ঞানের কিছু চ্যাপ্টার যেমনঃ উদ্ভিদের প্রজনন, অমরাবিন্যাস, বনাঞ্চল, বিভিন্ন চাষাবাদ পদ্ধতি ইত্যাদি কৃষির ধাঁচ আছে এমন চ্যাপ্টারগুলো খুব ভালো করে পড়তে হবে। পাশাপাশি প্রশ্নব্যাংক থেকে সলভ করতে হবে।
লেখকঃ মোঃ রাশেদুল হাসান
শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ছবি স্বত্ত্বাধিকারঃ Sk Rezwana Quadir Raisa
শিক্ষার্থী, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়